রোজাদার বাবা
প্রথম দৃশ্য: (মসজিদের বারান্দা)
(রোদের তাপে চারপাশ গরম, কেউ বসে কোরআন তিলাওয়াত করছে, কেউ চুপচাপ বিশ্রাম নিচ্ছে। ফজলে, রাশেদ ও করিম বসে কথা বলছে।)
ফজলে: ভাই, আজকের রোজাটা কেমন যাচ্ছে?
রাশেদ: আলহামদুলিল্লাহ, ভালোই। তবে এই গরমে একটু কষ্ট হচ্ছে।
করিম: কষ্ট তো হবেই, এটাই তো রোজার মূল শিক্ষা। আল্লাহ আমাদের ধৈর্য ধরতে শিখাচ্ছেন।
(ঠিক তখনই পাশের দোকান থেকে এক ব্যক্তি চিৎকার করে উঠলেন। তিনি রোজা রেখে রাগান্বিত হয়ে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে তর্ক শুরু করলেন।)
দ্বিতীয় দৃশ্য: (মসজিদের বাইরে তর্ক)
দোকানদার: এই ভাই, আপনি কি মানুষ? এতক্ষণ ধরে বলছি, লাইনে দাঁড়ান!
গ্রাহক: ভাই, আমি তো রোজা রেখেছি, আমার খুব তাড়া! একটু আগে দিন না!
(দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলতে থাকে, রাগান্বিত গ্রাহক ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। ফজলে, রাশেদ ও করিম এগিয়ে আসে।)
করিম: ভাই, রোজার প্রকৃত শিক্ষা কি শুধু ক্ষুধা সহ্য করা? ধৈর্য না থাকলে তো রোজার আসল উদ্দেশ্যই হারিয়ে যায়!
ফজলে: আমাদের নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রেখে মিথ্যা কথা বলা এবং খারাপ আচরণ ত্যাগ করতে পারে
না, তার শুধুই উপোস থাকা হলো, আল্লাহর কাছে এর কোনো মূল্য নেই।’(দোকানদার ও গ্রাহক একটু লজ্জিত হন। তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন।)
তৃতীয় দৃশ্য: (মসজিদের ভিতরে)
(সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, সবাই ইফতারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।)
রাশেদ: আসলে রোজা শুধু খাওয়াদাওয়া থেকে বিরত থাকার নাম নয়, আমাদের ব্যবহার, ধৈর্য, সংযম—সবকিছুই পরীক্ষা করা হয়।
করিম: হ্যাঁ, আর আমরা যদি রোজা রেখে রাগ করি, অন্যকে কষ্ট দিই, তাহলে তো রোজার মূল উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হয়ে যায়।
(আজানের ধ্বনি শোনা যায়, সবাই দোয়া করে ইফতার শুরু করে।)
উপসংহার:
রোজা শুধু না খেয়ে থাকার জন্য নয়, এটি আমাদের ধৈর্যশীল, সহনশীল ও ভালো মানুষ হতে শেখায়। রোজার প্রকৃত শিক্ষা হচ্ছে সংযম, সদাচরণ এবং আত্মশুদ্ধি। যদি আমরা রোজা রেখে অন্যের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করি, তাহলে আমাদের রোজা শুধুই এক প্রকার ক্ষুধার কষ্ট ছাড়া আর কিছুই নয়।
(গল্পের শিক্ষা: রোজা আমাদের ধৈর্যশীল ও ভদ্র হতে শেখায়। শুধু না খেয়ে থাকলেই রোজার উদ্দেশ্য
পূরণ হয় না, আমাদের ব্যবহারও সংযত রাখতে হয়।)
Comments
Post a Comment